আবার ফিরে এলাম ফন্টের খুঁটিনাটি নিয়ে। প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি দেরি করার জন্য। চলুন তবে আজকের পর্ব শুরু করা যাক।
গত পর্বে আমরা ফন্টের প্রাথমিক কিছু ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এ পর্ব থেকে ফন্ট তৈরীতে হাত দেব।
প্রথমেই আপনাদের ফন্টের টাইপ ডিজাইন প্রস্তুত করতে হবে। টাইপ ডিজাইন হলো আপনার ফন্টটার চেহারা। এরপর প্রয়োজন হবে ফন্টের গ্লিফ বা অক্ষরগুলোর তালিকা, এটাকে টেমপ্লেটও বলতে পারেন।
আমার মনে হয়ে নতুন টাইপ ডিজাইন করা বেশ কঠিন একটা কাজ। ভালোমানের টাইপোগ্রাফির জন্য সৃজনশীলতা আর দক্ষতা দুটোই প্রয়োজন। চারুকলার ছাত্ররা খুব সহজেই এ কাজটি করতে পারবেন।
আপনি যদি চারুকলার ছাত্র নাও হয়ে থাকেন তাতেও সমস্যা নেই, সাহস করে আপনিও টাইপ ডিজাইনে হাত দিতে পারেন। সবাই মিলে চেষ্টা করলে অবশ্যই ভালো কাজ বের হয়ে আসবে। টাইপোগ্রাফি নিয়ে সচলায়তনে মিলন ভাইয়ের চলমান সিরিজটিও পড়তে থাকুন; বাংলায় লিখি : ১ । নতুন টাইপ ডিজাইন না করতে চাইলে বর্তমান কোন ফন্টের টাইপও ব্যবহার করতে পারেন।
ধরে নিলাম আপনার টাইপ ডিজাইন তৈরী। এবার ফন্ট তৈরীর পালা। ফন্ট তৈরী দু’ভাবে শুরু করা যায়। একটা হলো একদম শূন্য থেকে শুরু করা, আরেকটা হলো বর্তমান কোন ফন্টকে ব্যবহার করে নতুন ফন্ট তৈরী করা। দ্বিতীয় পদ্ধতিটি, মানে পুরোনো একটা ফন্টের উপর নতুন অক্ষর বসিয়ে ফন্ট তৈরী করাটা সময় বাঁচায় কিন্তু এতে কিছু সমস্যাও আছে। একটা ফন্টের সাথে অনেক আনুষাঙ্গিক তথ্য (properties) সংরক্ষিত থাকে যেমন এসেন্ডার, ডিসেন্ডার , স্মুদিং, হিন্টিং, ইউপিএম সাইজ, মেট্রিক্স, কারনেল, ওপেন টাইপ টেবল ইত্যাদি। আপনি টেমপ্লেট হিসেবে একটি পুরোনো ফন্ট ব্যবহার করলে এর সকল প্রপার্টিজও নতুন ফন্টে চলে আসবে, কিন্তু সমস্যা হলো এতে করে পুরোনো ফন্টের ত্রুটিগুলোও নতুনটায় চলে আসে (যেমনটা হয়েছিল সিয়াম রূপালির ক্ষেত্রে, রূপালির সমস্যাগুলো সিয়াম রূপালিতেও ছিল)। পুরোনো ফন্ট নির্বাচনের সময় সতর্ক থাকবেন যে ফন্টটিতে কোন সমস্যা আছে কিনা। আর একদম নতুন করে শুরু করতে চাইলে প্রথমেই সব ধরণের অক্ষরের একটা তালিকা তৈরী করে নিন। তালিকায় যেসব অক্ষর থাকবে তা হলো-
১. সবগুলো মৌলিক অক্ষর (সংখ্যা ও কার সহ)।
২. হসন্তযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ।
৩. ব্যঞ্জনবর্ণের অর্ধরূপ।
৪. সকল যুক্তাক্ষর গোছানো ভাবে (sorted)
৫. ইংরেজি অক্ষর (যদি রাখতে চান)।
কালপুরুষের গ্লিফ ইনডেক্স – http://dl.dropbox.com/u/4697470/GlyphIndex-Kalpurush.pdf
এরপর আপনাদের যা করতে হবে তা হলো ফন্ট ডেভেলপমেন্ট করার সফ্টওয়্যারে আপনার তৈরী গ্লিফগুলো বসানো। এ ব্যাপারে আগামী পর্বে বিস্তারিত লিখব।
আপনারা দেরী না করে ফন্টল্যাব অথবা ফন্টফোর্জ নিয়ে বসে পড়তে পারেন। আমি অবশ্য ফন্টল্যাব ব্যবহার করি। তাই পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো ফন্টল্যাব নিয়ে।
ধন্যবাদ সবাইকে।
তানবিন ইসলাম সিয়াম
অমিক্রনল্যাব
siyam(a)omicronlab.com
পোস্টটি শনি, ২০১০-০৫-২৯ ০৩:৪৫ তারিখে সচলায়তনে প্রথম প্রকাশিত
<-প্রথম পর্ব
ধন্যবাদ ।
সিয়াম ভাই , চিন্তা করছি আমিও ফন্ট ডেভেলাপমেন্ট এ নেমে পড়ব ।
আপনার এই অসামান্য টিউটোরিয়ালের জন্য আবারো ধন্যবাদ ।
স্বাগতম সিফাত! কাজ শুরু করে দাও। 🙂
সালাম।
আমি কলকাতার বাসিন্দা। অভ্র ব্যবহার করি। কিন্তু ফন্টের লুক আমি পাল্টাতে চাই। আমাদের এখানে ইউনোকোড বা ঙ্লা আকাদেমি ফন্টটা ভাল। যদিও তা যুক্তাক্ষর ভাল নয়। আমি যুক্তাক্ষর না ভেঙ্গে প্রচলিত রাখতে চাই।তাই বাঙ্লা আকাদেমি ফন্টটা কপি করে নতুন ফন্ট করার চেষ্টা করছি। তবে আমি একেবারে নবিশ। ফন্টোগ্রাফার ৫ ব্যবহার করে ইউনিকোড ফন্ট তৈরি করলে যুক্তাক্ষরের লিংক নিচ্ছে না। যদিও অন্য অক্ষর ঠিক হচ্ছে। কিভাবে সমাধান হবে বলে দিলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
জাইদুল হক
ফোন: +৯১-৯৬৭৪১৩৩৫৮০
এর কারণ হচ্ছে আপনি যখনই ফন্ট এডিট করছেন এর সাথে থাকা ওপেনটাইপ লে আউট টেবল ভেঙ্গে যাচ্ছে। ওপেনটাইপ লে আউট টেবল পুনরায় যোগ করতে ফন্টফোর্জ অথবা মাইকরোসফট এর ভিজুয়াল ওপেনটাইপ লেআউট টুল (volt) ব্যবহার করতে হবে।
অসম্ভব ধৈর্য্য লাগে এই কাজ করতে! দুইটা গ্লিফ করেই টের পাইসিলাম। সময় এবং সুযোগ পেলে অবশ্যই কিছু করবো ইউনিকোড বাংলা ফন্টের জন্য।
আর তানবিন ইসলাম সিয়াম তো আছেই! অসাধারণ টিউটোরিয়াল ওস্তাদ! যথারীতি এগুলো তো মনে হয় আমি কপিরাইট আইনের আওতামুক্ত থেকে (গোপনে রুমে দেখা করে) পাবো, নাকি বলেন? 😉
ব্যাপার না! “সিসট্যাম জানা আছে!” 😛
😀
আমি তো আছিই। সমস্যা হলে রুমে আসিস।
সিয়াম ভাই,
আপনার লেখা পড়ে অবাক হলাম। ছোট থাকতে হাতে লেখা দেয়াল পত্রিকা বের করতাম। তখন আন্দাজেই বুঝে নিতে হত অনেক কিছু। সেই আন্দাজের পরিশীলিত রুপ দেখে বেশ ভাল লাগল।
শুভেচ্ছা
ফাহিম
অফটপিকঃ open office 3.2 তে বাংলা কিভাবে লিখব ? vrinda দিয়ে চেষ্টা করলে font এর জায়গায় Mangal লেখা আসে। আমি সিয়াম রূপালী download করলাম। আমি windows 7 ব্যবহার করি।
ধন্যবাদ।
openoffice এর সমস্যাটা বুঝলাম না। আমিওতো ব্যবহার করছি। কোন সমস্যা হচ্ছে না। ফন্টটা বদলে দিলেই লেখা যাচ্ছে।
আপনারা দেরী না করে ফন্টল্যাব অথবা ফন্টফোর্জ নিয়ে বসে পড়তে পারেন।
আমি নাই
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি…
দ্রুত ছাড়ার চেষ্টা করব। দোয়া করবেন।
পিংব্যাকঃ আমার ২০১০ সালের ব্লগজীবনের রিভিউ « টেস্টটিউব
দারুণ লাগল 🙂
কিন্তু পরের পোস্টগুলা কই?অপেক্ষায় থাকলাম…
সিয়াম, অপেক্ষা করতে করতে করতে করতে করতে করতে…
লেখো, ভাই…
পরের পর্বটা দাও…
লিখার চেষ্টা করছি ভাইয়া, কিন্তু গুছিয়ে উঠতে পারছি না।